মুফতী হাসান মুহাম্মাদ শরীফ
রমজানের প্রথম দশক রহমতের। আজ রহমতের ষষ্ঠ দিন। এ মাসে সর্বত্র খোদার রহমতের শামিয়ানা টানানো থাকে। রহমতের এই শীতল ছায়ায় জীবন কাটিয়ে মুমিনের উত্তরণ ঘটতে পারে তুলনামূলক কল্যাণের পথে। এজন্য তাকেই উদ্যোগী হতে হবে।
হযরত আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রমজান মাস এলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় আর দোজখের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানকে করে রাখা হয় শৃঙ্খলাবদ্ধ (বুখারী, মুসলিম)।
রমজান মাসে আল্লাহতায়ালার নেক্কার পরহেজগার বান্দারা সর্বদা ইবাদতে মগ্ন থাকেন। দিনের বেলা তারা রোজা রাখেন, কোরআন তিলাওয়াত করেন। আর রাতের বড় একটা অংশ তারাবি, তাহাজ্জুদ, দোয়া ও ইস্তেগফারে কাটিয়ে দেন। তাদের সান্নিধ্য, সাহচর্য ও ভালোবাসায় প্রভাবিত হয়ে সাধারণ মানুষের অন্তরও রমজান মাসে বেশি বেশি ইবাদত ও নেক কাজের দিকে ঝুঁকে পড়ে। পরিণতিতে অনেক গোনাহ থেকে তারা নিজেদের বাঁচিয়ে রাখে। পাপ ও গোনাহের প্রতি মানসিক ঘৃণা তাদের মধ্যে বিরাজ করতে থাকে।
তা ছাড়া এ মাসে সামান্য নেক কাজের প্রতিদানও আল্লাহর পক্ষ থেকে অন্যান্য মাসের তুলনায় বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব কিছুর অনিবার্য পরিণতি এটাই দাঁড়ায় যে, ওইসব লোকের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায় আর বন্ধ হয়ে যায় জাহান্নামের দরজা। শয়তান তাদের গোমরাহ করতে গিয়ে হতাশ হয়ে পড়ে।
রমজানের এই বরকত ও দান কেবল তারাই লাভ করতে পারে যারা এই মুবারক মাসে নেকি ও কল্যাণ হাসিলে উদ্যোগী হয় এবং আল্লাহতায়ালার ইবাদত ও আনুগত্যে নিজেদের নিয়োজিত রেখে রহমত, বরকত লাভের পথকে সুগম করে রাখে। পক্ষান্তরে যারা খোদাকে ভুলে বসে থাকে, খোদাকে চেনেও যারা জীবনের সঙ্গে প্রতারণা করে এবং রমজানের বিধিবিধানের সামান্যও পরোয়া করে নাÑ হাদিসের সুসংবাদের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কই থাকে না। যারা নিজেরাই নিজেদের হতভাগ্য ও বঞ্চিত করে রাখে, বারোটা মাসই যারা প্রবৃত্তি আর শয়তানের ধোঁকায় পড়ে জীবনশক্তিকে ক্ষয় করে আনন্দ পায়, আল্লাহতায়ালার কাছে তারা হতভাগ্য আর বঞ্চিত হিসেবেই নিজেকে প্রমাণ করে।
পাঠকের মতামত